অপ্রকাশিত চিঠি

 শোভার যেন দুঃখের কোনো শেষ নাই। পরীক্ষায় ফেল করার পর পড়াশোনার মন মানসিকতা চেঞ্জ হয়ে আর পড়তো না।পড়তো তবে বহু চিন্তা করে তার পড়াশোনা মনে রাখতে পারতো না।বহুবার আত্মহত্যা করতে গিয়েও ফিরে আসতে হয়েছে, তার কিছু দেনা আছে। সেজন্য তাকে বাচতে হবে, একটা সময় সব পরীক্ষায় পাশ করে উঠে।কেউ হয়তো নিরব অনুভূতি গুলো জানেও না।যাদের সাথে মিশতে চেষ্টা করছে হেসে হেসে তারাই তাকে মৃত্যুর দিকে টেনে নিয়েছে। আর একটা সময় পরে নিজের অবহেলার ঔষধ নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে, অসুস্থতার একটা হাসি দিয়েছে, কে জানতো এটাই ছিল তার শেষ হাসি।বাচার মতো সব রকম রাস্তা পথ সে বন্ধ করে দিয়েছে। সব মানুষ তাকে বিষিয়ে তুলেছিলো সে তাদের থেকে বহু দূরে চলে গেছে। সহানুভূতি দেখানো কিছু মানুষ আবার তাকে বাচতে শিখায়।তার মতন জীবন যুদ্ধে ব্যর্থ আর কাউকেই পাওয়া যায় নাই। মনে হয় ওর একটাই স্বপ্ন, বেঁচে থাকায় যেন তাহার স্বপ্ন। সব রকম অসুস্থ অলসতা কুচিন্তা ছেড়ে অতি ভালো সুভদ্র হয়ে একটা মূহুর্ত সে বাঁচতেছিলো। অমনি দুর্নীতি তাহারে আবার আক্রমণ করে বসলো।মানুষ যত কথাই বলুক,তার কথা কেউ শুনতে পায় না।সেই শোভা যেন রবীন্দ্রনাথের সুভার মতো কথা বলে না।কথা বলে আকাশের সাথে বাতাসের সাথে। তার কথার ভাষা কেউ বুঝে না তাই আজও সে কিছু বলেনী কাউকে। কেউ কেউ চরম খারাপ বদ কু মানুষ হিসেবে জানে।তারাই জানে যাদের স্বার্থে শোভা এগিয়ে আসেনী।নিঃস্বার্থভাবে আর কত,এভাবেও মানুষ বাঁচে তাকে দেখলেও বুঝা যায় না।আসলে সে মনে করে মানুষ তার জীবন আরও খারাপ ভাবে কাটাচ্ছে। কেউ না খেয়ে ও হেসে বেঁচে আছে । আর সে তো খেয়ে দিব্যি ভালো আছে। নিজের প্রতি আজ বড্ড বেশিই বিরক্তি। মাঝে মাঝে নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ হিসেবে মনে হওয়া কিন্তু ভুল কিছু না। কারণ পৃথিবীতে বর্তমানে এমন কিছু নাই যার প্রতি তার আকর্ষণ জন্মাবে,বড়ই রসকষহীন একটা মানুষ।এত সৎ হওয়া উচিত না একটা মানুষের, যারা তার সৎ সাহস এর সদ্বব্যবহার না করে দুর্নাম রটায় আর তাহার পিছনে পড়ে থাকে তারা আজও মূর্খের কাতারেই আছে। এই জগতের বাঁচা মরার লড়াইয়ে একটা সময় হেরে গেছে শোনা যায়,তখন অনেকেই তার জন্য আফসোস করে, কেউবা শোভা নামে কাউকে চিনে না,নাম জানা ত বহু দূরের বিষয়। এই অনিশ্চিত জীবন সংগ্রাম আর বেশি দিন চলবে বলে মনে হয় না, মৃত্যুর পরে শোনা যাবে জীবনে প্রথম ফেল করা বিষয়ে পাশ করে ফেলছে। শিক্ষা, পরিবার, সমাজ, সব জায়গায় বুঝানোর ব্যর্থ চেষ্টা করে একবার থেমে গেছে, এই পথে একবারে হাটা শুরু করেছে। পৃথিবীর এমন কোনো শক্তি নাই আর আটকাবে।মৃত্যুর পর কোনো এক ফাউন্ডেশন চোখ ও কিডনি নিয়ে যাবে,অলিখিত চুক্তির মাধ্যমে দান করে গেছে। জানেন,কি সব আবুল তাবুল লেখতো,মানুষকে এসব বলে বিরক্ত করতো, তার এসব নিজের লেখা পড়ে একটা সময় নিজেই বিস্ময় কি লেখে এসব, তার দ্বারা কিভাবে সম্ভব!হয়তো তার লেখা গুলো হারিয়ে যাবে কোনো এক নোট'সে লেখে যাওয়ার না বলা কিছু কথা। জানতে ইচ্ছে করে তারও,পৃথিবীর অবহেলা ঘৃণা এই শোভাকে যদি বাঁচতে না দেই।তাহলে প্রকৃতি কেনই বড় করেছিলো।জীবনে অনেক কিছু দেখে এসেছে, আর কিছু দেখার সাধ জাগে না।হঠাৎ শোনা যাবে নিখোঁজ, কেউ শেষ বারের মতো প্রশ্ন করতে পারবে না কেমন আছো শোভা।

শোভা'র ডায়েরি 

অপ্রকাশিত  চিঠি 

৯ নভেম্বর ২০২২


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আক্ষেপ

আজকের আপডেট

Bangladesh Career Olympiad